সাঁওতাল বিদ্রোহের সেকাল ও একাল: একটি সমালোচনামূলক অধ্যয়ন
Author(s): রঞ্জিত রায়
Abstract: ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ভারতের ব্রিটিশ সরকারের দমননীতির বিরুদ্ধে আদিবাসীরা যে রক্তক্ষয়ী এব্ ভয়াবহ বিদ্রোহ সংঘটিত করেছিল সেটি ভারতীয় ইতিহসে সাঁওতাল বিদ্রোহ নামে পরিচিত। এই সাঁওতাল বিদ্রোহ ১৮৫৫ সালে সংঘটিত হয়েছিল। সাঁওতাল বিদ্রোহ পূর্ব ভারতের সাঁওতাল পরগনা বর্তমানে ঝাড়খন্ড সংঘটিত হয়েছিল। এছাড়া বিহার ও পশ্চিমবঙ্গে সাঁওতালদের মধ্যে বিদ্রোহ দেখা দিয়েছিল । সাঁওতাল বিদ্রোহ “সাঁওতাল হুল” নামে পরিচিত। সাঁওতালদের ভাষায় “হুল” শব্দটি “বিদ্রোহ” বা “অভ্যুত্থান” -কে বোঝানো হয়। সিধু এবং কানু দুই ভাইদের নেতৃত্বে এই বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল। এই বিদ্রোহ চলেছিল ৩০ জুন ১৮৫৫ থেকে ৩ জানুয়ারি ১৮৫৬ পর্যন্ত (সর্বমোট ৬ মাস ও ৪ দিন)। সাঁওতালরা ছিল অত্যন্ত সরল ও কর্মঠ প্রকৃতির। কিন্তু তাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে জমিদার শ্রেণী থেকে শুরু করে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার তাদেরকে শোষণ, শাসন ও নানা দিক থেকে বঞ্চিত করেছিল। ফলে সাঁওতাল বিদ্রোহ দ্রুত সংঘটিত হয়েছিল। প্রথমদিকে ব্রিটিশ বাহিনী তাদের প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে ব্রিটিশ সরকার বিদ্রোহ দমন করতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে।ফলসরুপ প্রথম দিকে এই বিদ্রোহ সাফল্য লাভ করলেও শেষ পর্যন্ত সাঁওতালদের পরাজয় ঘটে I সেই সময়ে এই বিদ্রোহের অবশান হলেও সাঁওতালদের আজও তাদের জীবন ও জীবিকা, নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে রক্ষার জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছে। ১৮৫৫ সালে সংঘটত সাঁওতাল বিদ্রোহে বিদ্রোহের অনুপ্রেরনা আমাদের সকলকে যুগে যুগে মুক্তির স্বপ্ন দেখাবে।এই বিদ্রোহের নেতৃত্ব সাঁওতালদের হাতে ছিল বলেই হয়তো ইতিহাসে এমন নামকরণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।আসলে এই আন্দোলন ছিল শোষন ও নির্যাতন থেকে মুক্তির সংগ্রাম।